কলেজের ইতিহাস
এস,এম,এ, আহাদ মহাবিদ্যালয়
লাহুড়িয়া লোহাগড়া, নড়াইল।
( কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস )
বৃহত্তর যশোর জেলার নড়াইল মহকুমার (বর্তমানে জেলা ) লোহাগড়া থানার ( বর্তমান উপজেলা ) লাহুড়িয়া একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। সাবেক যশোর জেলার সবচেয়ে বড় গ্রাম হিসাবে পরিচিত লাহুড়িয়া গ্রামের রয়েছে ৮৫ টি পাড়া। এক গ্রাম ,এক ইউনিয়ন। লোকসংখ্যা প্রায় ৪০,০০০/- ( চল্লিশ হাজার )। গ্রামের প্রাণ কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও ফাজিল ( ডিগ্রী ) মাদ্রাসা সহ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ছিলনা শুধু একটা কলেজ। এলাকার ছাত্র- ছাত্রীদের একটি বড় অংশ হতো উচ্চ শিক্ষা বঞ্চিত। দেশ স্বাধীন হবার পর এলাকাবাসী স্বতস্ফুর্ত উদ্দোগ আর আন্তরি প্রচেষ্টায় লাহুড়িয়াতে একটি কলেজ স্থাপনের সূচনা হয়। গ্রাম বাসীকে সাথে নিয়ে এ কাজে নেতৃত্ব দেন জনাব রশিদ শিকদার ওরফে মন্টু শিকদার। কলেজের জন্য ভূমি দান করেন সৈয়দ পাড়ার জনাব সৈয়দ মোহন আলী ও তাঁর পরিবার, সেখ পাড়ার জনাব খান সিরাজুল ইসলাম ও তাঁর পরিবার এবং ত্রৈলক্ষ্য পাড়ার জনাব মোঃ আফসার মোল্যা। অতঃপর আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯৭৩ সালে স্থাপিত হয় লাহুড়িয়ার বুকে প্রথম উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “লাহুড়িয়া আদর্শ মহাবিদ্যালয়”। অতীব দুঃখের বিষয় যাত্রা শুরু করলেও টিকে থাকতে পারেনি এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিছক স্থানীয় কোন্দল ও সঠিক নেতৃত্বের অভাবে। জমাজমি,ঘর-বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অঙ্কুরেই বিনাশ হয় এ প্রতিষ্ঠানের।
সেই থেকে প্রায় দীর্ঘ দুই যুগের মত সময় অপেক্ষা করতে হয় লাহুড়িয়া বাসীকে একটি কলেজের জন্য। অতপর ১৯৯৫ ইং সনে শুরু হং নতুন উদ্দোগ। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব জি,এম, নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এলাকাবাসীর আন্তুরিক প্রচেষ্টায় পর্বোল্লেখিত দাতাগণের দানকৃত জমির উপর পূনরায় প্রতিষ্ঠিত হয় লাহুড়িয়া আদর্শ মহাবিদ্যালয়। প্রথম দিকে অবকাঠামোগত সমস্যার কারনে লাহুড়িয়া হাফেজ আব্দুল করিম একাডেমীর একটি ভবনে লাহুড়িয়া আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের একাডেমীক কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় জনসাধারণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং সার্বিক সহযোগীতা সত্তে^ও একটি কলেজ পরিচালনার মত বিশাল ব্যয়ভার পরিচালনা করাপ দুরহ হয়ে পড়ে। কলেজ কমিটির তৎকালীন সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব জি,এম, নজরুল ইসলাম এবং কলেজের বর্তমান সভাপতি ও লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব এস,এম,এ হান্নান (রুনু) বিষয়টি উপলব্ধি করে স্থানীয় জনসাধারণের পরামর্শে কলেজ প্রতিষ্ঠা পরিচালনার দায়িত্ব ন্যাস্ত করেন লাহুড়িয়ার কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট শিল্পপতি, শিক্ষানুরাগী, সমাজ সেবক ও দানবীর জনাব এস,এম,এ আহাদ-এর হাতে। সকল বিধি-বিধান প্রতিপালন পূর্বক কলেজের নতুন নাককরণ কারা হয় “এস,এম,এ, আহাদ মহাবিদ্যালয়”। এ কাজে জনাব এস,এম,এ আহাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র জনাব এস,এম, আক্তারুজ্জামান (তুহিন)। এ পযায়ে নির্মিত হয় কলেজের আধাপাকা একাডেমীক ভবন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব শরীফ খসরুজ্জামানের আন্তুরিক প্রচেষ্টায় ২০০০ইং সালে কলেজটি এম,পি,ও ভূক্ত লাভ করে। এস,এম,এ আহাদ মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জনাব এস,এম,এ আহাদ এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ২০০১ ইং সালে শুরু হয় কলেজের নবযাত্রা। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এর বিশাল ত্রি- তল একাডেমীক ভবন। নির্মিত হয় অধ্যক্ষের দ্বি-তল বাসভবন। পূরনো ভবন সংস্কার করে নির্মিত হয় ছাত্র হোষ্টেল ও শিক্ষক ডরমেটরী। প্রতিষ্ঠাতা মহোদয়ের নিজস্ব অর্থে ক্রয় করা হয় কলেজ সংলগ্ন ভূমি। বর্তমানে যার মোট পরিমান ৬.৪৬ একর, বাজর মূল্য কোটি টাকারও ঊর্ধ্বে। কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রীদেও কল্যাণে এবং কলেজের সার্বিক উন্নয়নে গঠন করা হয়েছে এস,এম,এ, আহাদ শিক্ষা ট্রাস্ট। বর্তমানে যার মূলধন ২৬,০০,০০০/- ( ছাব্বিশ লক্ষ ) টাকার উপরে। এ ছাড়াও এ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যণে এলাকার আর এক কৃতি সন্তান জনাব সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন কর্তৃক লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে গঠিত হয়েছে লণ্ডন ট্রাস্ট। ১৯৯৫ ইং সনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ এবং স্মাতক পযায়ে বি,এ,(পাশ) কোর্সসহ লাহুড়িয়ার বুকে লাহুড়িয়াবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশার ফসল লাহুড়িয়াবাসীর গর্ব “এস,এম,এ আহাদ ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়” তার আপন গতিতে সাবলীল ছন্দে চলছে আগামীর পথে।
ইতোমধ্যে এ মহাবিদ্যালয় হতে পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে ঢাকা, চট্রগ্রাম, খলনা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর সহ বাংলাদেশের প্রায় সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনকি জ্ঞান বিজ্ঞানের পীঠস্থান বিলেত সহ বহির্বির্শ্বেও সুনাম রয়ে আনছে এ প্রতিষ্ঠানের।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা জনাব এস,এম,এ আহাদ, কলেজের দক্ষ পরিচালনা পরিষদ, শিক্ষক মণ্ডলী, অভিভাবক মণ্ডলী, ছাত্র-ছাত্রী সর্বপরি এলাকাবাবাসীর ঐকান্তিক আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সার্বিক সহযোগীতায় এস,এম,এ, আহাদ মাহাবিদ্যালয়ের আগামী দিনের চলার পথ হবে অধিকতর দৃঢ় ও দীপ্তিময় এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের।